ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৩০৬

সেই চিলমারীতে সাংবাদিক-ভাওয়াইয়া শিল্পী রাজার দাফন 

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:৫৮ ১৮ মার্চ ২০১৯  

ওকি গাড়িয়াল ভাই....... হাকাও গাড়ি তুল চিলমারীর বন্দরে রে... ভাওয়াইয়া এই গানটি গেয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসেন কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার সন্তান শফিউল আলম রাজা।  সেই চিলমারীতে পারিবারিক গোরস্থানে সাংবাদিক ও ভাওয়াইয়া গানের জনপ্রিয় শিল্পী সফিউল আলম রাজাকে (৪৮)সোমবার দাফন করা হয়।  এর আগে স্থানীয় হাইস্কুল মাঠে তৃতীয় দফা নামাজে জানাজায় অংশ নেন সহ্স্রাধিক মানুষ। 
 রোববার রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে বাসা সংলগ্ন গানের স্কুল কলতানের একটি কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাজার পরিবারের দাবি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 
পারিবারিক সূত্র জানায়, রাজা কলতান নামে একটি গানের স্কুল চালাতেন। রোববার দুপুরে শয়ন কক্ষের দরজা ভেঙে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তার মেয়ে তাবাসসুম ফারিহা সানি জানান, শনিবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে লাইভ অনুষ্ঠান শেষে রাত ৩টায় বাসায় ফেরেন তার বাবা। আজ দুপুরে কাজের বুয়া এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে কোনো সাড়া না পেয়ে অন্যদের খবর দেয়। পরে দরজা ভেঙে মৃতদেহ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখি।

রাজা পল্লবীতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ‘কলতান সাংস্কৃতিক একাডেমী’নামে একটি গানের স্কুল খুলেছিলেন। সেই বাসাতেই তিনি থাকতেন। এক ছেলে এবং এক মেয়ের জনক ছিলেন।

রোববার সন্ধ্যায় মিরপুর বায়তুল আমান মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে রাজার লাশ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্বরে আনা হয়। সেখানে দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাজা শেষে সহকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তার লাশ নিয়ে পরিবা রের সদস্যরা সফিউল আলম রাজার  কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে নিয়ে রওনা হন। সেখানেই তৃতীয় দফা জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

রাজার জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী। কৈশোরে বাবা-মার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় গানে হাতেখড়ি হয় তার। সংগীতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা গ্রহণ না করলেও ভাওয়াইয়ার কিংবদন্তি-গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী নুরুল ইসলাম জাহিদের কাছে সংগীতের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন তিনি।

রাজা বাংলাদেশ বেতারের ‘বিশেষ’ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘প্রথম’শ্রেণীর শিল্পী।

লোক সংগীতের অন্যতম ধারা ভাওয়াইয়া গানের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে তিনি ২০০৮ সালে রাজধানীতে ‘ভাওয়াইয়া’গানের দল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১১ সালে রাজধানীতে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ভাওয়াইয়া স্কুল’।

২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি সংস্কৃতির সব শাখা নিয়ে রাজধানীর পল্লবীতে ‘কলতান সাংস্কৃতিক একাডেমী’ প্রতিষ্ঠা করেন এই শিল্পী, শিক্ষক ও সংগঠক।
তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘উত্তরের সুর’- এ চারটি মৌলিক ভাওয়াইয়া গান গেয়েছেন।

শিল্পী জীবনে রাজা বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত বেঙ্গল বিকাশ প্রতিভা অন্বেষণে লোকসঙ্গীত বিভাগে (ভাওয়াইয়া নিয়ে) ২০০৬ সালে শ্রেষ্ঠ শিল্পী নির্বাচিত হন।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে রাজার একটি মিক্সড অ্যালবাম এবং ভায়োলিন মিডিয়া থেকে ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় একক ভাওয়াইয়া অ্যালবাম ‘কবর দেখিয়া যান’।

সংগীত নিয়ে সফর করেছেন অষ্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ। তিনি সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোতে ‘বিচারক’হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। দৈনিক জনতা, যুগান্তরসহ সর্বশেষ প্রিয় ডটকমে দীর্ঘ ২৪ বছর সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন এ গুণী শিল্পী।

সাংবাদিকতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুরস্কার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার, ডেমোক্রেসি ওয়াচ হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড, ইউনেস্কো ক্লাব এসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড, ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ডসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

      
বিয়ে করলেন গায়িকা পুতুল
ক্লোজআপ ওয়ান তারকা হিসেবে শোবিজে যাত্রা করেন সাজিয়া সুলতানা পুতুল। এরপর বেশ কিছু গানে শ্রোতাদের মন জয় করেছেন তিনি। গানের পাশাপাশি লেখালেখিতেও প্রশংসিত এই গায়িকা।

পুতুল বিয়ে করতে যাচ্ছেন । গত ১৫ মার্চ পারিবারিকভাবে তার বাগদান সম্পন্ন হয়েছে। বরের নাম ইসলাম নুরুল। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুতুল।  

পুতুল জানান, নুরুল ইসলাম কানাডা প্রবাসী। সেখানে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পাশাপাশি শখের বসে ফটোগ্রাফি করেন।

দুদিন আগেই নুরুল ইসলামকে প্রথম দেখেছেন জানিয়ে পুতুল বলেন, আমাদের মধ্যে পূর্ব পরিচয় ছিলো না। পারিবারিক আয়োজনেই বিয়েটা হচ্ছে। গত পরশু বাগদান হয়ে গেল। আগামী ২০ মার্চ বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।

এদিকে পুতুলের বিয়ে উপলক্ষে একটি গান তৈরি করেছেন এই শিল্পী। বিয়ের দিন সেই গান নিজেই গাইবেন ।

মিডিয়া বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর